শসা(Cucumber)

শসা(Cucumber)

 শসার পরিচয়:

     বাংলা নাম: শসা

ü  ইংরেজি নাম: Cucumber

ü বৈজ্ঞানিক নাম: Cucumis sativus

ü পরিবার: Cucurbitaceae (লাউ পরিবার)

 শসা একটি গ্রীষ্মকালীন সবজি জাতীয় ফল। এটি মূলত  কাঁচা অবস্থায় সালাদ, আচার কিংবা তরকারিতে ব্যবহার  করা হয়।

শসার উৎপত্তি:

শসার উৎপত্তি প্রাচীনকাল থেকে, বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়ার অঞ্চলে। এটি প্রথম চাষ করা হয়েছিল ভারত এবং চীনে, প্রায় ৩,০০০ বছর আগে। প্রাচীন মিশরীয়রা শসা খেত এবং এটি তাদের খাদ্য তালিকায় একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল। পরে, শসা ইউরোপ এবং অন্যান্য অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে এবং বিভিন্ন জাতের শসা তৈরি হয়।

শসার জাত:

শসার কিছু গুরুত্বপূর্ণ জাত নিচে দেওয়া হলো:

১. বারি শসা-১  

উদ্ভাবক: বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (BARi)।  

গাছ খাটো, ফলন ভালো।  

ফল সবুজ ও মসৃণ।  

২. বারি শসা-২  

ফল লম্বা ও মাঝারি মোটা।  

স্বাদে ভালো, উচ্চ ফলনশীল।  

৩. বারি শসা-৩ 

গ্রীষ্মকালীন চাষের উপযোগী।  

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি।

৪. হাইব্রিড জাত  

যেমন: Green Long, Himangi, Shiny Long.  

ফলন বেশি, বাণিজ্যিক চাষে জনপ্রিয়।  

রোগবালাই কম হয়।

৫. দেশি জাত  

স্বাদে কিছুটা তিক্ত।

আকারে ছোট ও মোটা।  

৬. বিদেশি জাত  

যেমন: চাইনিজ, জাপানি জাত।  

খোসাসহ খাওয়া যায়, পাতলা ও মসৃণ।  

প্রতিটি জাতের জলবায়ু ও মাটির উপযোগিতা বিবেচনায় চাষ করা উচিত।

শসার ব্যবহার:

১. সালাদে: তাজা শসা খাওয়ার সবচেয়ে জনপ্রিয় রূপ।

২. রূপচর্চায়: শসার রস ত্বক ও চোখের ফোলাভাব কমাতে ব্যবহৃত হয়।

৩. পানীয়: শসার পানি ডিটক্স ওয়াটার হিসেবেও খাওয়া হয়।

৪. আচার: অনেক এলাকায় শসা দিয়ে আচার তৈরি করা হয়।

শসার পুষ্টিগুণ:

ক্যালোরি কম।

ভিটামিন K, C, A.

পটাশিয়াম ও ম্যাগনেশিয়াম।

অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট (ফ্ল্যাভোনয়েড, ট্যানিন)।

১০০ গ্রাম শসার (Cucumber) পুষ্টি উপাদান:

১০০ গ্রাম শসার (Cucumber) পুষ্টি উপাদান সাধারণত নিচের মতো হয়:

শক্তি (Energy): ১৫–১৬ কিলোক্যালোরি  

পানি: ৯৫–৯৬%  

কার্বোহাইড্রেট: ৩.৬ গ্রাম  

প্রোটিন: ০.৬ গ্রাম  

চর্বি (Fat): ০.১ গ্রাম  

ফাইবার: ০.৫ গ্রাম  

ভিটামিন C: ২.৮ মি.গ্রা.  

ভিটামিন K: ১৬.৪ মাইক্রোগ্রাম  

ভিটামিন A (Beta-carotene): অল্প পরিমাণে  

ক্যালসিয়াম: ১৬ মি.গ্রা.  

পটাশিয়াম: ১৪৭ মি.গ্রা.  

ম্যাগনেশিয়াম: ১৩ মি.গ্রা.  

আয়রন: ০.৩ মি.গ্রা.

 শসার উপকারিতা:

১. ৯৫% পানি: শরীর হাইড্রেট রাখে।

২. হজমে সহায়ক: ফাইবার থাকায় কোষ্ঠকাঠিন্য কমায়।

৩. ত্বক ও চোখ: শীতলতা দেয়, ফোলাভাব কমায়।

৪. ওজন কমাতে সাহায্য করে: ক্যালোরি কম ও পেট ভরে।

৫. রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ: পটাসিয়াম থাকায় সহায়ক।

    শসার  অপকারিতা:

১. অতিরিক্ত খেলে ঠান্ডা লাগতে পারে।

২. রাসায়নিকযুক্ত শসা ধোয়া না হলে পেটের সমস্যা হতে পারে।

৩. বেশি খেলে বারবার প্রস্রাব হতে পারে।

 ৷  শসার  চাষাবাদ:

১. মৌসুম: বসন্ত ও গ্রীষ্মকাল উপযুক্ত।

২. মাটি: দোআঁশ বা বেলে দোআঁশ মাটি ভালো।

৩. বপন পদ্ধতি: ৩০–৪০ সেমি দূরত্বে বীজ বপন।

৪. সেচ ও আগাছা: নিয়মিত পানি দিতে হয়, আগাছা পরিষ্কার রাখতে হয়।


৫. ফলন সময়: সাধারণত ৪৫–৬০ দিনের মধ্যে ফসল পাওয়া যায়।



মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

কাকরোল (Spiny Gourd)

টমেটো(Tomato)