কাঁঠাল( Jackfruit)

কাঁঠাল(Jackfruit) 

কাঁঠালের পরিচয়:

বাংলা নাম: কাঁঠাল  

ইংরেজি নাম: Jackfruit  


 বৈজ্ঞানিক নাম: Artocarpus Heterophyllus  

 পরিবার: Moraceae  

 কাঁঠাল বাংলাদেশে জাতীয় ফল হিসেবে পরিচিত। এটি বৃহৎ আকারের ও সুগন্ধযুক্ত ফল।

কাঁঠালের উৎপত্তি:

এটি একটি গ্রীষ্মপ্রধান ফল যা দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় বিশেষভাবে পরিচিত। কাঠালের উৎপত্তি দক্ষিণ এশিয়ার বনাঞ্চল থেকে, বিশেষ করে বাংলাদেশ ভারত,এবং শ্রীলঙ্কা থেকে। এটি বাংলাদেশের জাতীয় ফল এবং গ্রামীণ জীবনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। কাঠাল গাছ সাধারণত ২০-২৫ মিটার উচ্চতায় বৃদ্ধি পায় এবং এর ফলগুলি গাছের শাখায় জন্মায়।

কাঁঠালের প্রকারভেদ:  

কাঠালের বিভিন্ন প্রকারভেদ রয়েছে, যা তাদের আকার, রঙ এবং স্বাদের উপর ভিত্তি করে আলাদা করা যায়। কিছু সাধারণ প্রকারভেদ হলো:

১. হিন্দোল কাঠাল: এটি সাধারণত ছোট এবং মিষ্টি স্বাদের হয়।

২. চাঁপা কাঠাল: এটি বএবং মিষ্টি স্বাদের হয়, যা সাধারণত রান্নায় ব্যবহৃত হয়।

৩. কোয়া কাঁঠাল: এর কোয়া বড় ও নরম, খেতে রসালো ও সুস্বাদু। 

. কাঁচা কাঠাল: এটি সবুজ এবং শক্ত, যা তরকারি বা ভাজা হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

. পাকা কাঠাল: এটি হলুদ এবং মিষ্টি, যা সরাসরি খাওয়া হয়।

৬. খাজা কাঁঠাল: এর কোয়া অপেক্ষাকৃত শক্ত ও কম রসালো। এটি সংরক্ষণযোগ্য এবং শুকিয়ে রাখা যায়।

এছাড়াও যেমন: গোলা,রামভোগ, পনসা, বিলাই ইত্যাদি।

কাঁঠালের ব্যবহার:

১. পাকা কাঁঠাল: ফল হিসেবে খাওয়া হয়।

২. কাঁচা কাঁঠাল: তরকারি বা ভুনা হিসেবে রান্না করা হয়।

৩. বীজ (কাঠাল বিচি): ভাজি বা তরকারিতে ব্যবহার হয়।

৪. কাঠ: আসবাবপত্র তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।

কাঁঠালের উপকারিতা:


১. শক্তির উৎস: এতে প্রচুর কার্বোহাইড্রেট ও ক্যালোরি থাকে।

২. ভিটামিন সমৃদ্ধ: ভিটামিন A, B6 ও C থাকে যা চোখ ও ত্বকের জন্য উপকারী।

৩. ফাইবার: হজমে সাহায্য করে, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।

৪. অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট: রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।

কাঁঠালের ক্ষতিকর দিক:

১. অতিরিক্ত খেলে গ্যাস্ট্রিক বা বদহজম হতে পারে।

২. ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য অতিরিক্ত পাকা কাঁঠাল খাওয়া ক্ষতিকর।

৩. অনেক সময় অ্যালার্জি বা অস্বস্তি দেখা দিতে পারে।

কাঁঠালের পুষ্টি উপাদান: 

কাঁঠালে রয়েছে প্রচুর পুষ্টি উপাদান । প্রতি ১০০ গ্রাম কাঁঠালে প্রায়: 

শক্তি: ৯৫কিলোক্যালরি 

ফাইবার: ১.৫ গ্রাম 

ভিটামিন: A, B6, C

কার্বোহাইড্রেট: ২৩ গ্রাম 

প্রোটিন: ১.৭ গ্রাম 

পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ক্যালসিয়াম ও আয়রন

 কাঁঠালের অর্থনৈতিক গুরুত্ব:

 কাঁঠালের চিপস, ক্যানড কাঁঠাল ও জ্যাম জাতীয় পণ্য তৈরি করে রপ্তানি করা হচ্ছে। কাঁঠালের গাছ কাঠ হিসেবে ব্যবহৃত হয় যা আসবাবপত্র তৈরিতে উপযোগী।

বাংলাদেশসহ উপমহাদেশে কাঁঠাল একটি গুরুত্বপূর্ণ মৌসুমি ফল। এটি স্থানীয় বাজারে বিক্রি ছাড়াও প্রক্রিয়াজাত করে ফলে এটি কৃষকদের জন্য আর্থিকভাবে লাভজনক ফসল।

কাঁঠালের চাষাবাদ:

 জমি ও মাটি: উঁচু ও পানি নিষ্কাশনের উপযোগী দোআঁশ বা বেলে দোআঁশ মাটি।

 বপনের সময়: মার্চ-এপ্রিল মাসে চারা রোপণ উত্তম।

 সার প্রয়োগ: গোবর, ইউরিয়া, টিএসপি ও এমওপি ব্যবহার করতে হয়।


 ফলন: ৩-৫ বছরের মধ্যে ফল দিতে শুরু করে।

 পরিচর্যা: নিয়মিত আগাছা পরিষ্কার, সেচ ও রোগ-বালাই দমন করতে হয়।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

শসা(Cucumber)

কাকরোল (Spiny Gourd)

টমেটো(Tomato)