Featured Post

জলপাই(Olive)

ছবি
জলপাই(Olive)  জলপাই চিরসবুজ একটি ফলবাহী গাছ , এটি “Oleaceae” গোত্রের “Olea europaea” নামক গাছের ফল। যার বৈজ্ঞানিক নাম  Olea europaea । এটি মূলত ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের উদ্ভিদ । বর্তমানে বাংলাদেশেও জলপাইয়ের বাণিজ্যিক চাষ অধিক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। জলপাই  উৎপত্তি ও ইতিহাস জলপাই গাছের উৎপত্তি মনেকরা হয় আনুমানিক ৬ , ০০০ বছর পূর্বে ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে।বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থ বিশেষ করে বাইবেল ও কুরআন শরিফ এ জলপাইয়ের কথা উল্লেখ করা হয়েছে । পবিত্র কুরআনে আল্লাহ বলেন , “ জলপাই গাছ , যা পূর্ব কিংবা পশ্চিমের নয় ” । জলপাই  গাছের পরিচিতি জলপাই গাছ মোটামূটি মাঝারি আকারের হয় যা উচ্চতায় প্রায় ৭ - ১৭ মিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে।এর পাতাগুলো সবুজ রঙের এবং লম্বা । ফুলগুলো ছোট ও সাদা। ফল প্রথমে সবুজ , বয়স হওয়ার সাথে সাথে কালচে বেগুনি বা কালো বর্ণ এর হয়।গাছটি দীর্ঘজীবী অনেক বছর ধরে বেঁচে থাকে। জলপাই এর  পুষ্টিমান জলপাই পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ একটি ফল . জলপাইয়ের উপকারিতা পরিপাকতন্ত্রের উন্নতি: জলপাইয়ের খোসায় থাকা আঁশ হজমে সাহায্য করে ও গ্যাস্ট্রিক-আলসার কমায়। হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়: ...

লাউ( bottle gourd/calabash)

লাউ/কদু( bottle gourd/calabash)

লাউ এর পরিচয়:


লাউ, যা "লাউ" বা "লাউ গুটি" নামে পরিচিত, এটি Cucurbita family এর একটি উদ্ভিদ। বৈজ্ঞানিক নাম: Lagenaria siceraria. এটি এক প্রকার লতানো গাছ, যার ফল লম্বাটে ও সবুজ। সবজি হিসেবে লাউ অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং এর স্বাদ মিষ্টি। লাউ গাছের কচি পাতা ও ডগা লাউ শাক নামে খাওয়া হয়।  এটি আঁশযুক্ত এবং হালকা সবুজ রঙের হয়।এটি দ্রুত বৃদ্ধি পায় এবং সাধারণত গ্রীষ্মকালীন মৌসুমে পাওয়া যায়।

 লাউয়ের উৎপত্তি ও বিকাশ:

লাউয়ের উৎপত্তি দক্ষিণ এশিয়ায়।বহু আগে থেকেই এটি বাংলাদেশ, ভারত, চীন, আফ্রিকা প্রভৃতি দেশে চাষ হয়। বর্তমানে এটি বিভিন্ন দেশে পাওয়া যায়।লাউয়ের গাছ সাধারণত ৩-৪ মিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়। এটি একটি লতানো গাছ, যা মাটির উপর বা অন্য গাছের উপর বেড়ে ওঠে। গাছের ফুল হলুদ রঙের এবং ফল সাধারণত সবুজ রঙের হয়।

লাউ এর জাত (Varieties of Bottle Gourd):

লাউ (Lagenaria siceraria) একটি জনপ্রিয় সবজি। বাংলাদেশে বিভিন্ন জাতের লাউ চাষ হয়ে থাকে। নিচে কিছু পরিচিত জাত তুলে ধরা হলো:

১. দেশি লাউ:  

   সাধারণত গ্রামবাংলায় চাষ হয়।  

   ফলন কম, তবে স্বাদে ভালো।  

২. বারি লাউ ১:  

   উদ্ভাবন: বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি)।  

   ফলন বেশি, রোগ প্রতিরোধী।  

৩. বারি লাউ ২:  

   আরও উন্নত জাত, চওড়া ও বড় আকৃতির লাউ।  

   সুস্বাদু ও সংরক্ষণযোগ্য।  

৪. হাইব্রিড লাউ:  

   বিভিন্ন বেসরকারি কোম্পানির উন্নত জাত।  

   দ্রুত বাড়ে ও বাণিজ্যিকভাবে লাভজনক।  

৫. অক্টোবর লাউ বা আগাম লাউ:  

   শীত শুরুর আগেই ফল আসে।  

   চাহিদা ও দাম বেশি থাকে।  

১০০ গ্রাম লাউয়ে পুষ্টি উপাদান (Nutritional Value per 100g of Bottle Gourd):

শক্তি (Energy): 14 কিলোক্যালরি  

জলীয় অংশ (Water): প্রায় 96%  

প্রোটিন: 0.6 গ্রাম  

চর্বি (Fat): 0.1 গ্রাম  

কার্বোহাইড্রেট: 3.39 গ্রাম  

আঁশ (Dietary Fiber): 0.5 গ্রাম  

ক্যালসিয়াম: 26 মিলিগ্রাম  

পটাশিয়াম: 150 মিলিগ্রাম

আয়রন: 0.2 মিলিগ্রাম  

ভিটামিন সি: 10 মিলিগ্রাম  

ভিটামিন বি-কমপ্লেক্স: সামান্য  

লাউ একটি হালকা ও সহজপাচ্য সবজি, যা ডায়াবেটিক রোগীদের জন্যও উপযোগী।

লাউ এর উপকারিতা:


লাউ:

১. পুষ্টিকর: লাউয়ে ভিটামিন A, C, এবং ফাইবার রয়েছে, যা শরীরের জন্য উপকারী।

২. হজমে সহায়তা: লাউয়ের ফাইবার হজমে সহায়ক এবং কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করে।

৩. ওজন ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ: লাউ কম ক্যালোরি যুক্ত হওয়ায় এটি ওজন ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।

৪. ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ: লাউয়ের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম, যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী।

 

৫.শরীরকে ঠাণ্ডা রাখে: ৯৫% পানি, তাই শরীরকে ঠাণ্ডা রাখে।

লাউ শাক:

১. পুষ্টিকর: লাউ শাকে ভিটামিন A (দৃষ্টিশক্তি বাড়ায়), C, এবং আয়রনের পরিমাণ বেশি।

২. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়: এটি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।

৩. হজমে সহায়তা: লাউ শাকের ফাইবার হজমে সহায়ক ও পেট পরিষ্কার রাখে।

৪. হাড়ের গঠন: আয়রন ও ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ যা হাড়ের গঠন মজবুত করে।

লাউ এর অপকারিতা:

লাউ:

১. অ্যালার্জি: কিছু মানুষের লাউয়ের প্রতি অ্যালার্জি থাকতে পারে।

২. পেটের সমস্যা: অতিরিক্ত লাউ খেলে পেটে গ্যাস হতে পারে। কখনো কখনো তেতো লাউ (bitter gourd contamination) বিষক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে।

লাউ শাক:

১. অ্যালার্জি: কিছু মানুষের লাউ শাকের প্রতি অ্যালার্জি থাকতে পারে।

২. পেটের সমস্যা: অতিরিক্ত লাউ শাক খেলে পেটে অস্বস্তি হতে পারে।

লাউ এর চাষাবাদ (লাউ ও লাউ শাক):

লাউয়ের চাষ সাধারণত গ্রীষ্মকালীন মৌসুমে করা হয়।

মাটি: দোআঁশ বা বেলে মাটি সবচেয়ে ভালো।

বীজ বপন: ফেব্রুয়ারি–মার্চ, জুন–জুলাই (দুই মৌসুমেই চাষ হয়) বীজ বপন করা হয়।

পানি দেওয়া: নিয়মিত পানি দেওয়া প্রয়োজন, তবে জলাবদ্ধতা এড়াতে হবে।

সার প্রয়োগ: গোবর, টিএসপি, ইউরিয়া ও এমওপি সুষমভাবে দিতে হয়।

পরিপক্বতা: বীজ বপনের ৫০–৬০ দিনের মধ্যে ফল সংগ্রহ করা যায়। 

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

শসা(Cucumber)

কাকরোল (Spiny Gourd)

রাতের বেলায় খাবারের উপযুক্ত এমন কিছু সবজি(Some vegetables that are good for dinner)