লাউ( bottle gourd/calabash)

লাউ/কদু( bottle gourd/calabash)

পরিচয়:


লাউ, যা "লাউ" বা "লাউ গুটি" নামে পরিচিত, এটি Cucurbita family এর একটি উদ্ভিদ। বৈজ্ঞানিক নাম: Lagenaria siceraria. এটি এক প্রকার লতানো গাছ, যার ফল লম্বাটে ও সবুজ। সবজি হিসেবে লাউ অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং এর স্বাদ মিষ্টি। লাউ গাছের কচি পাতা ও ডগা লাউ শাক নামে খাওয়া হয়।  এটি আঁশযুক্ত এবং হালকা সবুজ রঙের হয়।এটি দ্রুত বৃদ্ধি পায় এবং সাধারণত গ্রীষ্মকালীন মৌসুমে পাওয়া যায়।

 লাউয়ের উৎপত্তি ও বিকাশ:

লাউয়ের উৎপত্তি দক্ষিণ এশিয়ায়।বহু আগে থেকেই এটি বাংলাদেশ, ভারত, চীন, আফ্রিকা প্রভৃতি দেশে চাষ হয়। বর্তমানে এটি বিভিন্ন দেশে পাওয়া যায়।লাউয়ের গাছ সাধারণত ৩-৪ মিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়। এটি একটি লতানো গাছ, যা মাটির উপর বা অন্য গাছের উপর বেড়ে ওঠে। গাছের ফুল হলুদ রঙের এবং ফল সাধারণত সবুজ রঙের হয়।

উপকারিতা:


লাউ:

১. পুষ্টিকর: লাউয়ে ভিটামিন A, C, এবং ফাইবার রয়েছে, যা শরীরের জন্য উপকারী।

২. হজমে সহায়তা: লাউয়ের ফাইবার হজমে সহায়ক এবং কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করে।

৩. ওজন ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ: লাউ কম ক্যালোরি যুক্ত হওয়ায় এটি ওজন ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।

৪. ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ: লাউয়ের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম, যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী।

 

৫.শরীরকে ঠাণ্ডা রাখে: ৯৫% পানি, তাই শরীরকে ঠাণ্ডা রাখে।

লাউ শাক:

১. পুষ্টিকর: লাউ শাকে ভিটামিন A (দৃষ্টিশক্তি বাড়ায়), C, এবং আয়রনের পরিমাণ বেশি।

২. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়: এটি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।

৩. হজমে সহায়তা: লাউ শাকের ফাইবার হজমে সহায়ক ও পেট পরিষ্কার রাখে।

৪. হাড়ের গঠন: আয়রন ও ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ যা হাড়ের গঠন মজবুত করে।

অপকারিতা:

লাউ:

১. অ্যালার্জি: কিছু মানুষের লাউয়ের প্রতি অ্যালার্জি থাকতে পারে।

২. পেটের সমস্যা: অতিরিক্ত লাউ খেলে পেটে গ্যাস হতে পারে। কখনো কখনো তেতো লাউ (bitter gourd contamination) বিষক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে।

লাউ শাক:

১. অ্যালার্জি: কিছু মানুষের লাউ শাকের প্রতি অ্যালার্জি থাকতে পারে।

২. পেটের সমস্যা: অতিরিক্ত লাউ শাক খেলে পেটে অস্বস্তি হতে পারে।

চাষাবাদ (লাউ ও লাউ শাক):

লাউয়ের চাষ সাধারণত গ্রীষ্মকালীন মৌসুমে করা হয়।

মাটি: দোআঁশ বা বেলে মাটি সবচেয়ে ভালো।

বীজ বপন: ফেব্রুয়ারি–মার্চ, জুন–জুলাই (দুই মৌসুমেই চাষ হয়) বীজ বপন করা হয়।

পানি দেওয়া: নিয়মিত পানি দেওয়া প্রয়োজন, তবে জলাবদ্ধতা এড়াতে হবে।

সার প্রয়োগ: গোবর, টিএসপি, ইউরিয়া ও এমওপি সুষমভাবে দিতে হয়।

পরিপক্বতা: বীজ বপনের ৫০–৬০ দিনের মধ্যে ফল সংগ্রহ করা যায়। 

Next Post Previous Post

SVG Icons