মটরশুটি (Pea)
মটরশুটি (Pea)
পরিচয়:

মটরশুটি একটি ছোট, গোলাকার সবজি যা সাধারণত সবুজ রঙের হয়।মটরশুটি একটি জনপ্রিয়
শীতকালীন শাকসবজি। মটরশুটির গাছ সাধারণত ৩০-৭০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়। এটি
একটি লতানো গাছ, যা মাটিতে বা অন্য গাছের উপর বেড়ে ওঠে। গাছের ফুল সাদা বা হলুদ রঙের
হয় এবং ফলগুলি সাধারণত ৫-১০ সেন্টিমিটার লম্বা হয়।
এর ইংরেজি নাম Pea এবং বৈজ্ঞানিক নাম Pisum sativum। এটি মূলত একটি লেগিউম জাতীয়
ফসল।(লেগিউম জাতীয় ফসল (Legume crops) মানে হলো এমন গাছ বা ফসল যেগুলোর শুঁটি বা ফলের ভেতরে
বীজ থাকে এবং যেগুলো মাটিতে নাইট্রোজেন যোগ করে)যার শুঁটির মধ্যে অনেকগুলো বীজ থাকে।
এটি পিয়াস (Pisum sativum) গাছের ফল এবং এটি বিভিন্ন রান্নায় ব্যবহৃত হয়।
উৎপত্তি ও বিকাশ:
মটরশুটির উৎপত্তিস্থল দক্ষিণ-পশ্চিম এশিয়া এবং ইউরোপ বলে ধারণা করা হয়।
বর্তমানে এটি বিশ্বের প্রায় সব দেশেই চাষ হয়, বিশেষত বাংলাদেশ, ভারত, চীন, ইউরোপ
ও আমেরিকায়।এটি হাজার হাজার বছর ধরে চাষ করা হচ্ছে এবং বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পাওয়া যায়।
এটি বিভিন্ন জাত ও প্রজাতিতে বিভক্ত, যেমন: গ্রিন পি, সুগার পি, স্নো পি ইত্যাদি।
উপকারিতা:
১. প্রোটিন সমৃদ্ধ: এতে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন থাকে, যা শরীর গঠনে সহায়ক।
২. পুষ্টিকর: এতে ভিটামিন A, B, C, K, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম ও জিঙ্ক থাকে। যা শরীরের
জন্য উপকারী।
৩. হজমে সহায়তা: মটরশুটির ফাইবার হজমে সহায়ক এবং কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করে।
৪. ওজন নিয়ন্ত্রণ: এটি কম ক্যালোরি যুক্ত হওয়ায় ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
৫. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়: মটরশুটির অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য শরীরের
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
৬. ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক: কম ক্যালোরি যুক্ত খাদ্য হিসেবে মটরশুটি স্বাস্থ্যকর।
অপকারিতা:
১. অতিরিক্ত খেলে গ্যাস ও পেট ফাঁপা হতে পারে।
২. কিছু মানুষের জন্য এটি অ্যালার্জির কারণ হতে পারে।
৩. হজমে সমস্যা:কাঁচা অবস্থায় বেশি খেলে হজমে সমস্যা হতে পারে।
চাষাবাদ:

মৌসুম: সাধারণত শীতকালেই এটি চাষ হয়।
মাটি: দোআঁশ ও বেলে দোআঁশ মাটি সবচেয়ে উপযোগী।
বীজ বপন: অক্টোবর থেকে নভেম্বর মাসে বীজ বপন করা হয়।
সেচ ও নিষ্কাশন: ভালো নিষ্কাশনের ব্যবস্থা থাকতে হবে।
সার: জৈব সার, ইউরিয়া, টিএসপি, এমওপি প্রয়োগ করা হয়।
রোগবালাই: পাতা ঝলসানো, পোকামাকড় আক্রমণ থেকে বাঁচাতে বালাইনাশক ব্যবহার করা
হয়।
উপসংহার:
মটরশুটি একটি পুষ্টিকর ও জনপ্রিয় সবজি, যার চাষ সহজ এবং উপকারিতাও অনেক। সঠিকভাবে
চাষ ও সংরক্ষণ করলে এটি অর্থনৈতিকভাবেও লাভজনক।